UNPUBLISHED BENGALI POEMS BY SRI ANIRVAN




UNPUBLISHED BENGALI POEMS BY SRI ANIRVAN

স্বাহাকৃতি

অনির্বাণ

আপুর্যমাণ অচলপ্রতিষ্ঠ চেতনা !

অরংকৃতির আকর্ষণ পরিধিকে গুটিয়ে আনছে

সুষুম্ন -তন্তুতে গাঁথা মনিবিন্দুর সন্ততিতে !

শুভ্রু অগ্নিস্শিখার তপতী আকূতি জ্বলছে তার পর্বে পর্বে -

'জ্যোতিরিবাধুমক:'

'নিবাত নিষ্কম্প :'........

এক গভীর আহুতি ---

কৈশিকীর সর্পিল বিদ্যুতে ঝঙ্কৃত বৈশ্বানরের স্বাহামন্ত্র :

'হৈমবতি আবির, আবির ম এধি !'

সাড়া এলো দিগন্তের ঢেউ খেলানো পরিভূ প্রানের সমুদ্র হতে :

'এই যে আমি '..........

হিরন্য গর্ভের উত-সর্পিণী ভাবনার নিরুদ্ধ বেদনায়

কাঁপছি তোমার সত্তার গভীরে ....................

তোমার অশ্রু -থর থর বাষ্পল চেতনায়

এই যে আমি

অরুন্ধতি উষার হৃদয় - ছাওয়া কেতকী কোমল আভা :

আনি উদ্যানের জয়ন্ত আশ্বাস ,

এলিয়ে দি ই তোমার অন্তর হৃদয়ের নি:শব্দ আকাশে !

বৈশ্বানর,

আমি যে তোমার স্বপ্ন স্বয়ম্বরা স্বাহাকৃতি !'

ঘুচলো আড়াল !

তৃষার অনুর জ্যোতিরনুতে

এ কী উদ্বেলিত সমুদ্রের নিথর কল্লোল !

কোথায় আমার চাওয়া ?

দেখছি ,

হৃদয়ে - হৃদয়ে আমারই আকূতি অগ্নিনাগিনী

বিদ্যুজ্জিহ্ব লেলিহায় লেহন করছে

মহাব্যোমের রিক্ততাকে !

তৃনান্চিত পৃথিবীর রোমাঞ্চে শুনি

কোন বিরহিনীর ব্যাকুল কন্ঠস্বর :

' ও গো বৈশ্বানর ,

ওগো অগস্ত্য -চেতনার প্রলয়ী তৃষা,

আর যে পারি না.....

আমায় টেনে নাও .....টেনে নাও তোমার অস্পর্শ

অরূপ সত্তার অতলে !'

স্তব্ধ বৈশ্বানর

'নিবাত নিষ্কম্প :'.............................

'জ্যোতিরিবাধুমক:'................

চকিত বসন্তের স্বপ্ন ভঙ্গে

কত যে কিশোরী -চেতনার আবেশে -বিবশ শিহরণ

অরের মত সমর্পিত হয়ে আহে

একটি আদিত্য হৃদয়ের ধ্রুব দ্যুতিতে !

শুধু প্রসন্ন দৃষ্টিতে চাওয়া তাদের পানে,

শুধু এক নি:শব্দ মধুর স্বীকৃতি ,

শুধু বামদেব্য সামচেতনার এই অজপা :

'ওম আয়াহি !'

আপ্তোকামের প্রত্যাহরণে

মুগ্ধা প্রকৃতি লীন হল উন্মনী চেতনার মনিকূটে-

ব্যাপ্ত অহল জগন্ময়

অস্পর্শ -অশব্দের গভীরে নিশ্বসিত

এক হৈমন্তী নিরতির হিরন্ময় মুর্চ্ছানা

'ওগো কোথায় আমি .......

'আমি তো নাই .......'



*************************

অনিমেষ

অনির্বাণ
আজ তিনটি দিন ধরে ,অচলসুতা ,
কজের ফাঁকে -ফাঁকে মুখ তুলে দেখছি -
ওই আকাশের গায়ে হেলান দিয়ে
অতন্দ্র নয়নে তাকিয়ে আছ
কোন সুদূরের প্রতিচ্ছবির পানে I
দুটি কুবলয়ের নিস্পন্দ নিতলে
মন্থর হেমন্তের নীলাভো রৌদ্রের রোমাঞ্চে যেন
স্বপ্নের চূর্ণরশ্মি- ছড়ানো রহস্যের নির্বাক আমন্ত্রণ I


নিঃসুপ্ত আমার মৃদুশ্বসিত আঁধারে ও
সর্বাঙ্গে বুলিয়ে চলছ তোমার সজাগ দৃষ্টি I
মুখ ফুটে একটি কথাও বলছ না -
বিবসন বুকের জ্যোছনা
রিক্ততার ধূসর বুকে
কবোষ্ণ সোহাগে লুটিয়ে পরছেনা একটিবারও I
স্ফিন্কসের নৈশব্দ্য়ে হিমেল
এ কী দুঃসহ অপলক তোমার চেয়ে থাকা I


চেতনা নিঃসাড় হয়ে আসে মৃত্যুর নেশায় I
সেইই নিঝ্ঝুম মুর্চ্ছনে
ভয়াল নাস্তিতার গভীর তন্ত্রে ক়ে যেন হানে
নির্মম বঞ্চনার কর্কশ ঝন্ঝনা :
'ম্যায় ভূকা হু 'I

কিন্তু তোমার বুভুক্ষু প্রানের লোলজিহ্বা সৃক্কনিলেহন
এই অতৃষ্ণ নিরতির নির্বেদ- মেদুর ললাটে
শিথিল সঞ্চারে নেমে আসে
তুষার মৌনের বুকে উষার যেন রাঙা চুমা I
পরিনির্বানের অপ্রকেত কুহরে
মৃত্যুর ও মরণ হয়
আকাশগঙ্গার দুরান্ত অনালোকে অনুচ্ছল আলোর বন্যায় I
বুঝি বুভুক্ষার নিষ্ঠুর তাড়ন
কোন দেব্গন্ধর্বের মৃদুল ছোয়ায়
লজ্জায় মিইয়ে পড়ে
সদ্য -চোখ -মেলা -ভালবাসার কমল মিড়ে I

তখনও তুমি নিঃশব্দে তাকিয়ে আছ
দূর -দিগ বলয়ের বিদিশা শূণ্যতার পানে I
আর তোমার রহস্য নীল সেই দৃষ্টির গভীরে
কী নিবিড় আশ্বাসে কাঁপছে
বিবাগী পূরুরবার
দুকুলহারা ব্যাকুল চাওয়ার দুটি রঙিন পাখা I
তারপর ,
নৈরাত্ম্যের পীতাভ -পান্দুরে পড়ল কি
আনমনে -ভেসে -আসা- সজল মেঘের
একটুখানি কাজল ছায়া ?
অভ্রত্তরণ সাম্পরিশ্বন্গের নীহারে প্রাবৃত
যুগনদ্ধ সুমেরুতন্ত্রে কি ঝিলিক হানলো
অনঙ্গ সুরতবন্ধের বিদ্যুত রিমঝিম ?

তার অকিন্চান্যা নিরায়তনে
তোমার অমা -তনিমার কৌষেয় - বিভ্রম বুঝি
অতর্কিত পূর্বরাগের অভিঘাতে থরথর I
তার প্রসন্ন সুস্মিতে অনামা ভুবনের অরুন স্বপ্ন
ঝরে পরছে ইন্দ্রনীল -ললাটিকা রহ্স্য বঞ্চনায় ঝিলমিল I
তার বিপাশা জ্যোছনার ফেনিল মায়ায়
শিলীভূত নির্ঝরের সুপ্তির কুলে
অরুন্ধতী অস্তিতার ক্ষনভঙ্গী লাস্যের ছন্দ যেন টলমল I

তবুও তুমি অতন্দ্র নয়নে
তাকিয়ে আছ যে কিসের পানে I
তোমার পলকহারা দৃষ্টির বিদ্যুচ্চকিত উল্কারেখায়
খুঁজে পাই নচিকেতা অভীপ্সার রহস্যকুঞ্চিকা --
অনুত্তারার অন্তশ্চ -অন্চার দিব্যক্র্তুর অবন্ধ্যা ইশারায় I
অনেক ব্যর্থতার অনেক মৃত্যুর উত্তাল গর্জন ছাপিয়ে চলেছে
অস্তি আর নাস্তির মিথুনে প্ররোহী
মহাজীবনে অশ্রান্ত উত্তর অয়ন I

মুহুর্তের তরে
ধু -ধু -দিগন্তের উপান্তে ভেসে ওঠে
তোমার কিশোরী আকূতির তাম্রপর্নী প্রচ্ছায়া
অজর সবুজের সঙ্কেতে শবলা I
আরো .....আরো .....দুরে ......
দিবদুহিতা অহনার সুনীল নয়নে
সদ্য ঘুম ভাঙ্গা দৃষ্টির কূলে
অজানা -জানায় অনির্বচনিয়ের মুগ্ধ বিস্ময় Η

তোমার নয়নে তবুও নিমেষ নাই II



দুঁহু মন

অনির্বাণ

'দুঁহু মন মনোভাব পেষল জনি ' :

এই শেষ সত্য, রেখা --

বিগলিত মরণের রোমহর্ষণ রভসে I

এই শেষ .....

তবু ও সে অনাদি ...... অশেষ ....



কিঞ্চিত - পরিলুপ্ত ধৈর্যের বাঁধন

উর্বশীর কবরীর বিস্রস্ত সৌরভে বুঝি টলমল :

উদ্ভ্রান্ত ভ্রূমর তাই খুঁজে ফেরে

আধফোটা কমলের লজ্জারুণ মধুর বিভ্রম I



অকস্মাত কেটে যায় কুয়াশার ঘোর I

রংছুট আকাশের প্রসন্ন ছোঁয়ায়

ঝিরিঝিরি হৃদয়ের মদির কাঁপন

রাসটানা আকুতির নির্বেদে শিথিল I

জোত্স্না স্নাত সিলেটের সম্মুগ্ধ বিতানে

চেয়ে দেখি রূপ ধরে অচ্ছদবসনা একটু - বিরাগী

মনের তুলির টানে I



তোমার অনঙ্গ

আসঙ্গের নির্বাক ইশারা তবু

বিদ্যুটতে চকিত I

সারাদিন তারা ঘিরে

ভ্রমের গুনগুন,

সরসর নারিকেলশাখার দোলনে

বাতাসের দীর্ঘ শ্বাস , পাপিয়ার দীর্ণ কন্ঠে

রতিবিলাপের ঢেউ- ওঠাপড়া.........



তারপর বেলা ডুবে গেলে

ঘুচে যায় সকল আড়াল , রেখা :

চোখ মেলে -চেয়ে -থাকা অবুঝ পিপাসা

অতনু -তরঙ্গ ভঙ্গে

বুজে আসে বুকের সুতলে

পাওয়ার কি গভীর সুখে I



সব -ছাওয়া

আঁধারের অকূল অতল, আহা

দুঁহু মন পেষল.....পেষল ...পেষল জনি --

ন হম রমণ, ন সো রমণী II



দুটি কবিতা

শ্রী অনির্বাণ

মোহনায়

রূপ আর অরুপের মোহনায় দাঁড়িয়ে আছি I

হৃদয়ের শুভ্র রিক্ততার কুহরে

কাঁপছে যে - স্বপ্ন সঙ্গিনীর মেদুর ছায়া ,

এ - পৃথিবীর বুকে সে যেন আজ থেকেও নাই I

ফাল্গুনী জ্যোত্স্নার ধারাসারে বাউল মন

শিথিল বন্ধনে অরুপাকে জড়িয়ে ধরেও

চায়না সে চকিত সৌরভ স্পর্শের রূপায়ন

একটুখানি রূপের আভাস

অন্তরের বন্হি দহনে বাষ্প তরল হয়ে

মিলিয়ে যাক দ্যুলোকের অফুরন্ত অন্ধকারে :

সেখানে

প্রকাশে বেদনায় রুদ্ধ শ্বাস প্রক্ষভে বিপ্লুত

কোন অব্যক্তের নির্মম পরিচয় ?



রহস্যের নীলাভ কুয়াসায় চেয়ে গেল আমার মন I

জীবনের উষার মরুতে

কোথায় পরম তাত্পর্যের অভ্রকনা ?

কোথাও নাই I

চরম পাওয়ার সুনিশ্চিত প্রত্যাশায় কি এনেছিল তবে

গতির সুষমা , চাঁদের দোলা ?

জানিনা I



বাউল হাওয়া অকারণ বইছে আলুথালু হয়ে I

বুদ্ধির শাসনে তাকে বাঁধতাম যদি, সে ই কি ধরত সত্যের রূপ ? আজ

শেষ কথাটা আর অজানা নয় :

এই হওয়ার - ই মতন শূন্যের বুকে ফুরিয়ে যাওয়া I

কিন্তু তার উপান্তে দাঁড়িয়ে

একটু মুহুর্তের তরে ও

অফুরানের ঘোমটা না খসাতে পারলাম যদি -

তবে ?

শক্ত করে তাকে ধরতে চাই এই মুঠির মাঝে ,

বুদ্ধির দেউটিতে ঘুরিয়ে - ঘুরিয়ে দেখতে চাই ,

চিনতে চাই তার কুটিল রহস্যের প্রত্যেকটি বাঁক I

তারপর ,

তাকে ছুঁড়ে ফেলে দিতে চাই

আমার ওই নিশ্কৌতুহাল রিক্ততার ধুসর প্রত্যন্তে ...



বুকের ফাঁকায় নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসে I

এই যে পেয়েছি তাকে :

অবর্ন জীবনের প্রচ্ছদে

বিচিত্র বর্ণালী -লেখার প্রতানে

থেকে থেকে সুনীল মৃত্যুর কসি -

ধোঁয়া -ধোঁয়া মেঘের ফাঁকে -ফাঁকে

আকাশের অথৈ ইশারার মত I

বুদ্ধির এই খদ্যতিকাই

তামসী নীহারিকার অন্ধ অতলে জাগায়

দুঃসহ দ্যুতির বিস্ফোরণ I

তার সুতীখ্নো এষনার ইষিকায়

মর্ত্যের শ্রান্ত লালাতে সহসা ঝিকিয়ে ওঠে

অর্যামার বিদ্যুজ্জিহ্বা দৃষ্টির স্ফুলিঙ্গ -

ক্ষণিকার আলোয় ঝলক হানে অরুপের রহস্যরুপ I



তারপর ,

আবার সেই অজানার হাতছানি ,

বুক জুড়ে সেই পেয়েও- না- পাওয়ার ব্যাকুলতা ....

নিষ্ঠুর প্রেম বৈচিত্ত্যের সেই আতুর বিদ্রুপ I

এই কি তবে জীবনের উত্তরায়ন -

মরণের ম্ন্দাক্রান্তায় প্রবহন্ত প্রানের রূপাভিসার

রূপ আর অরুপের মযূর কন্ঠী মিতালিতে

অনাব্সান রহস্যের চমক শুধু !

তা-ই হবে II



অপ্রতিম



শ্রী অনির্বাণ

তস্মাদ ইদম অর্ধবৃগলম ইব স্বঃ , তস্মাদ অযম আকাশঃ স্ত্রিয়া পুর্যাত এব --

------- বৃহদারন্যকোপনিসদ

আকাশের মন নাই I তোমার ও তো রূপ নাই -

আছে শুধু রেখার ইশারা I

ওই দেখ ভুবনে - ভুবনে

বারানসেয় দেবদত্তের ধুমজ্যতিরাতুর কামনা

রামগিরি - কন্দরে- কান্তারে মাথাকুটে মরে : তার

সুতনুকা আলো নয় ---

আলেয়ার হাতছানি শুধু I তাই বলি ,

দুঁহু মন পেষার আগেই

মনোভবে পিষে ফেল পিষে ফেল , রেখা I

উশতী সুবাসা জায়ার আকূতি তনুবিসারিনী

ধুম্জ্যতিঃ সলিল মরুতান সন্নিপাতী মেঘ শুধু ....

শুধু গেঁজে ওঠা মাধুরীর ফেনা ..

আকাশ কোথায় ?



চেয়ে দেখ , অতানুকা,

এই অন্তর হৃদয়ে দহর কমলের ঘরখানি

আমনা মুক্তির মৌক্তিক বিভ্রমে রচা I

এ - ঘর তোমার নয় , তুমি ই এ - ঘর I

অমনার ধুপছায়া - মনের মুকুরে

ইন্দ্রযোনি -বিচ্ছুরিত লাবন্যের আভা

অহনার কাল্পকায়ার কবিতা :

আনন্দ -বেদনা নয় -অস্তিতার সান্দ্র- শিহরণে

আত্মরতির বিদ্যুত অনঙ্গ রেখার টানে

এঁকে চলে অপ্রতিম ছায়ার প্রতিমা I



রসার অতলে গচ্ছিত স্বপ্নের ভ্রুণ I তারই অন্কুরণে

দৃষ্টি হয় চোখ, প্রাণ ঘ্রাণ পিপাসা অধর

আকাশের হৃদয় দোলায়

বামদেব্য সামের গুঞ্জন I

স্পর্শে আকূতি হতে বিচ্ছুরিত

কমলার নীহারিকা - তনুর তননে

বিকাসিছে থরে- থরে কমলের দল I



সব আছে , শুধু মন নাই I তাই রেখা,

সমুদ্রে জোয়ার - ভাটা থেমে গেছে I

আকাশের নীলে শুধু গুরো -গুরো আলোর কাঁপন ....

অতনুর সুতনুকা মাধুরীর মায়া

অর্ধবৃগলের অসঙ্গে নিবিড় II



**************************



সৌর কলঙ্ক
অনির্বাণ
স্বাচ্ছন্দ্যের রোমন্থন রইল না জীবনে --
এ এক পরিত্রাণ, একটা আশীর্বাদ ;
চরম পাওয়ার আয়েস জড়ত়া আনল না কোনওদিন
এক নিরাসক্ত চাওয়া
শূন্যের মসৃন বুকে উঁচিয়ে রইলো কাঁটার মত--
'তারপর..............'I


এই যদি নিয়তি হয় ,
জয় হক সে নিয়তির I
করালিনীর কুটিল ভ্রুকুটিতে
দু 'খান হয়ে ভেঙ্গে পড়ুক বসন্ত সখার ফুলধনু
পাষাণীর কঠিন অশ্লেল্শ পাঁজর গুড়িয়া দিক
গুড়িয়া দিক এসব শিথিল চেতনায় ফেনিয়ে ওঠা
ক্লিন ভালবাসার আতুর স্বপ্ন I


নিষ্ঠুর উল্লাসে চর্বন কর মনের যত বিভ্রম
হে রক্তদান্তিকা,
কিছুরই কোন শেষ রেখোনা যেন I
থাক শুধু নিকিন্চন প্রলয়ের নিঃসীম তেপান্তর :
চোখ বুজে সব ফুরিয়ে দেবার আরাম নেই তার মধ্যে
আছে মধ্যাহ্নসুর্যের নিশ্চিত তিখ্নতায় ঝলসানো দৃষ্টিতে
এক অজানা রশ্মির চকিত আবির্ভাবের প্রত্যশা শুধু I

আর আনন্দের কাকলি থাক শিশুর তরে -
উদ্দীপ্ত যৌবনের কঠিন মুষ্টির পরে এলো
অনড় পাষাণ প্রকারের দ্বন্দ্বাহ্বান :
' বিলু চিদ আ রুজ 'I





কাজরী
শ্রী অনির্বাণ
সকালে কাজল মেঘে ঢেকেছে আকাশ I
জল ঝরে রিমঝিম I রুদ্ধ বাতাস
চাপা কান্নার ভারে ভারী করে তোলে
পাইনের বন I. পাখীরা সঙ্গীত ভোলে I
ঝিরিঝিরি বয়ে চলে ঝরণার ধারা
একঘেয়ে সুরে I. মন তো দেয় না সাড়া
কোন- কিছুতেই I কিছু করবার নেই ---
এলোমেলো ভাবনার হারায়েছে খেই
ধোঁয়া-ধোঁয়া মেঘের মিছিলে I.
কোথায় গেলে
বল দেখি ! আবছা -ছায়ায় ছায়া মেলে
শূন্যে মিলালে I. এদিক-ওদিক খুঁজি
পিয়াসী আঙুলে I. তারপর চোখবুজি--
হতাশায় নয় ওগো , ব্যথাতেও নয়. I
মনের ফাঁকায় নেই হারাবার ভয় -
নিঃশেষে জেনেছি , তাই স্বপ্ন শিথিল
চেরাপুঞ্জির ওই মেঘের মিছিল
ছুঁয়ে-ছুঁয়ে যায়. I ও- মেঘ চলেছে ভেসে
জানার অকূল হতে অজানার দেশে I.
উদাসী চোখের চাওয়া তারই সাথে চলে
মন্থর আলোর স্রোতে I
বেলা পরে ঢলে I.
কল্লোল শোনা যায় : ওই তো সাগর ......
ওই নীল থৈ থৈ -- কুলহারা মরন - বাসর I.
কাজল মনের মেঘ ওইখানে নামে,
বুকের নীরব ঝড় ওরই বুকে থামে II





রাধার আকূতি

শ্রী মা

যখনি তুলিনু আঁখি ও- মুখের পানে,

জানিলাম,----

তুমিই আমার পরম দেবতা,

সব- ছাওয়া হে আমার সত্তার ঈশ্বর !

লও , ওগো লও মোর প্রানের আহুতি I



আমার ভাবনা যত, আমার আবেগ,

হৃদয়ের উল্লসিত যত রসালস ,

ইন্দ্রিয়ের যা - কিছু বেদন,

জীবনে যে ছন্দের স্পন্দন,

এ -তনুর প্রতি অণু,

ধমনীর প্রতি রক্তকণা.....

তারা যে তোমারই বঁধু, আমার তো নয় ......

তোমারি যে তারা !



অনিঃশেষে তোমার ই যে আমি ...

কেবলি তোমার.....

কুণ্ঠাহীন আত্মনিবেদনের ওগো তোমার ....

তোমার কি চাও আমার মাঝে ?

বল .... বল .....তা- ই হব আমি !



কিদেবে আমারে তুমি ?

মৃত্যু না জীবন , উল্লাস না শোক ?

সুখ দেবে ? দুঃখ দেবে ?

যা দাও আপন হাতে, ওগো বঁধু,

তা - ই আমি বুকে তুলে লব,

যা কিছু দাও না তুমি ,

দ্যুলোকের নির্মাল্য সে- আনিবে বহিয়া

এ - হৃদয়ে নিত্য শুধু ও নুত্তাম আনরভস ΙΙ





RADHA 'S PRAYER BY SHRI MA

Translated into Bengali by SRI ANIRVAN





দুঁহু মন

অনির্বাণ

'দুঁহু মন মনোভাব পেষল জনি ' :

এই শেষ সত্য, রেখা --

বিগলিত মরণের রোমহর্ষণ রভসে I

এই শেষ .....

তবু ও সে অনাদি ...... অশেষ ....



কিঞ্চিত - পরিলুপ্ত ধৈর্যের বাঁধন

উর্বশীর কবরীর বিস্রস্ত সৌরভে বুঝি টলমল :

উদ্ভ্রান্ত ভ্রূমর তাই খুঁজে ফেরে

আধফোটা কমলের লজ্জারুণ মধুর বিভ্রম I



অকস্মাত কেটে যায় কুয়াশার ঘোর I

রংছুট আকাশের প্রসন্ন ছোঁয়ায়

ঝিরিঝিরি হৃদয়ের মদির কাঁপন

রাসটানা আকুতির নির্বেদে শিথিল I

জোত্স্না স্নাত সিলেটের সম্মুগ্ধ বিতানে

চেয়ে দেখি রূপ ধরে অচ্ছদবসনা একটু - বিরাগী

মনের তুলির টানে I



তোমার অনঙ্গ

আসঙ্গের নির্বাক ইশারা তবু

বিদ্যুটতে চকিত I

সারাদিন তারা ঘিরে

ভ্রমের গুনগুন,

সরসর নারিকেলশাখার দোলনে

বাতাসের দীর্ঘ শ্বাস , পাপিয়ার দীর্ণ কন্ঠে

রতিবিলাপের ঢেউ- ওঠাপড়া.........



তারপর বেলা ডুবে গেলে

ঘুচে যায় সকল আড়াল , রেখা :

চোখ মেলে -চেয়ে -থাকা অবুঝ পিপাসা

অতনু -তরঙ্গ ভঙ্গে

বুজে আসে বুকের সুতলে

পাওয়ার কি গভীর সুখে I



সব -ছাওয়া

আঁধারের অকূল অতল, আহা

দুঁহু মন পেষল.....পেষল ...পেষল জনি --

ন হম রমণ, ন সো রমণী II



দুটি কবিতা

শ্রী অনির্বাণ

মোহনায়

রূপ আর অরুপের মোহনায় দাঁড়িয়ে আছি I

হৃদয়ের শুভ্র রিক্ততার কুহরে

কাঁপছে যে - স্বপ্ন সঙ্গিনীর মেদুর ছায়া ,

এ - পৃথিবীর বুকে সে যেন আজ থেকেও নাই I

ফাল্গুনী জ্যোত্স্নার ধারাসারে বাউল মন

শিথিল বন্ধনে অরুপাকে জড়িয়ে ধরেও

চায়না সে চকিত সৌরভ স্পর্শের রূপায়ন

একটুখানি রূপের আভাস

অন্তরের বন্হি দহনে বাষ্প তরল হয়ে

মিলিয়ে যাক দ্যুলোকের অফুরন্ত অন্ধকারে :

সেখানে

প্রকাশে বেদনায় রুদ্ধ শ্বাস প্রক্ষভে বিপ্লুত

কোন অব্যক্তের নির্মম পরিচয় ?



রহস্যের নীলাভ কুয়াসায় চেয়ে গেল আমার মন I

জীবনের উষার মরুতে

কোথায় পরম তাত্পর্যের অভ্রকনা ?

কোথাও নাই I

চরম পাওয়ার সুনিশ্চিত প্রত্যাশায় কি এনেছিল তবে

গতির সুষমা , চাঁদের দোলা ?

জানিনা I



বাউল হাওয়া অকারণ বইছে আলুথালু হয়ে I

বুদ্ধির শাসনে তাকে বাঁধতাম যদি, সে ই কি ধরত সত্যের রূপ ? আজ

শেষ কথাটা আর অজানা নয় :

এই হওয়ার - ই মতন শূন্যের বুকে ফুরিয়ে যাওয়া I

কিন্তু তার উপান্তে দাঁড়িয়ে

একটু মুহুর্তের তরে ও

অফুরানের ঘোমটা না খসাতে পারলাম যদি -

তবে ?

শক্ত করে তাকে ধরতে চাই এই মুঠির মাঝে ,

বুদ্ধির দেউটিতে ঘুরিয়ে - ঘুরিয়ে দেখতে চাই ,

চিনতে চাই তার কুটিল রহস্যের প্রত্যেকটি বাঁক I

তারপর ,

তাকে ছুঁড়ে ফেলে দিতে চাই

আমার ওই নিশ্কৌতুহাল রিক্ততার ধুসর প্রত্যন্তে ...



বুকের ফাঁকায় নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসে I

এই যে পেয়েছি তাকে :

অবর্ন জীবনের প্রচ্ছদে

বিচিত্র বর্ণালী -লেখার প্রতানে

থেকে থেকে সুনীল মৃত্যুর কসি -

ধোঁয়া -ধোঁয়া মেঘের ফাঁকে -ফাঁকে

আকাশের অথৈ ইশারার মত I

বুদ্ধির এই খদ্যতিকাই

তামসী নীহারিকার অন্ধ অতলে জাগায়

দুঃসহ দ্যুতির বিস্ফোরণ I

তার সুতীখ্নো এষনার ইষিকায়

মর্ত্যের শ্রান্ত লালাতে সহসা ঝিকিয়ে ওঠে

অর্যামার বিদ্যুজ্জিহ্বা দৃষ্টির স্ফুলিঙ্গ -

ক্ষণিকার আলোয় ঝলক হানে অরুপের রহস্যরুপ I



তারপর ,

আবার সেই অজানার হাতছানি ,

বুক জুড়ে সেই পেয়েও- না- পাওয়ার ব্যাকুলতা ....

নিষ্ঠুর প্রেম বৈচিত্ত্যের সেই আতুর বিদ্রুপ I

এই কি তবে জীবনের উত্তরায়ন -

মরণের ম্ন্দাক্রান্তায় প্রবহন্ত প্রানের রূপাভিসার

রূপ আর অরুপের মযূর কন্ঠী মিতালিতে

অনাব্সান রহস্যের চমক শুধু !

তা-ই হবে II



অপ্রতিম



শ্রী অনির্বাণ

তস্মাদ ইদম অর্ধবৃগলম ইব স্বঃ , তস্মাদ অযম আকাশঃ স্ত্রিয়া পুর্যাত এব --

------- বৃহদারন্যকোপনিসদ

আকাশের মন নাই I তোমার ও তো রূপ নাই -

আছে শুধু রেখার ইশারা I

ওই দেখ ভুবনে - ভুবনে

বারানসেয় দেবদত্তের ধুমজ্যতিরাতুর কামনা

রামগিরি - কন্দরে- কান্তারে মাথাকুটে মরে : তার

সুতনুকা আলো নয় ---

আলেয়ার হাতছানি শুধু I তাই বলি ,

দুঁহু মন পেষার আগেই

মনোভবে পিষে ফেল পিষে ফেল , রেখা I

উশতী সুবাসা জায়ার আকূতি তনুবিসারিনী

ধুম্জ্যতিঃ সলিল মরুতান সন্নিপাতী মেঘ শুধু ....

শুধু গেঁজে ওঠা মাধুরীর ফেনা ..

আকাশ কোথায় ?



চেয়ে দেখ , অতানুকা,

এই অন্তর হৃদয়ে দহর কমলের ঘরখানি

আমনা মুক্তির মৌক্তিক বিভ্রমে রচা I

এ - ঘর তোমার নয় , তুমি ই এ - ঘর I

অমনার ধুপছায়া - মনের মুকুরে

ইন্দ্রযোনি -বিচ্ছুরিত লাবন্যের আভা

অহনার কাল্পকায়ার কবিতা :

আনন্দ -বেদনা নয় -অস্তিতার সান্দ্র- শিহরণে

আত্মরতির বিদ্যুত অনঙ্গ রেখার টানে

এঁকে চলে অপ্রতিম ছায়ার প্রতিমা I



রসার অতলে গচ্ছিত স্বপ্নের ভ্রুণ I তারই অন্কুরণে

দৃষ্টি হয় চোখ, প্রাণ ঘ্রাণ পিপাসা অধর

আকাশের হৃদয় দোলায়

বামদেব্য সামের গুঞ্জন I

স্পর্শে আকূতি হতে বিচ্ছুরিত

কমলার নীহারিকা - তনুর তননে

বিকাসিছে থরে- থরে কমলের দল I



সব আছে , শুধু মন নাই I তাই রেখা,

সমুদ্রে জোয়ার - ভাটা থেমে গেছে I

আকাশের নীলে শুধু গুরো -গুরো আলোর কাঁপন ....

অতনুর সুতনুকা মাধুরীর মায়া

অর্ধবৃগলের অসঙ্গে নিবিড় II





অনিমেষ

অনির্বাণ
আজ তিনটি দিন ধরে ,অচলসুতা ,
কজের ফাঁকে -ফাঁকে মুখ তুলে দেখছি -
ওই আকাশের গায়ে হেলান দিয়ে
অতন্দ্র নয়নে তাকিয়ে আছ
কোন সুদূরের প্রতিচ্ছবির পানে I
দুটি কুবলয়ের নিস্পন্দ নিতলে
মন্থর হেমন্তের নীলাভো রৌদ্রের রোমাঞ্চে যেন
স্বপ্নের চূর্ণরশ্মি- ছড়ানো রহস্যের নির্বাক আমন্ত্রণ I


নিঃসুপ্ত আমার মৃদুশ্বসিত আঁধারে ও
সর্বাঙ্গে বুলিয়ে চলছ তোমার সজাগ দৃষ্টি I
মুখ ফুটে একটি কথাও বলছ না -
বিবসন বুকের জ্যোছনা
রিক্ততার ধূসর বুকে
কবোষ্ণ সোহাগে লুটিয়ে পরছেনা একটিবারও I
স্ফিন্কসের নৈশব্দ্য়ে হিমেল
এ কী দুঃসহ অপলক তোমার চেয়ে থাকা I


চেতনা নিঃসাড় হয়ে আসে মৃত্যুর নেশায় I
সেইই নিঝ্ঝুম মুর্চ্ছনে
ভয়াল নাস্তিতার গভীর তন্ত্রে ক়ে যেন হানে
নির্মম বঞ্চনার কর্কশ ঝন্ঝনা :
'ম্যায় ভূকা হু 'I

কিন্তু তোমার বুভুক্ষু প্রানের লোলজিহ্বা সৃক্কনিলেহন
এই অতৃষ্ণ নিরতির নির্বেদ- মেদুর ললাটে
শিথিল সঞ্চারে নেমে আসে
তুষার মৌনের বুকে উষার যেন রাঙা চুমা I
পরিনির্বানের অপ্রকেত কুহরে
মৃত্যুর ও মরণ হয়
আকাশগঙ্গার দুরান্ত অনালোকে অনুচ্ছল আলোর বন্যায় I
বুঝি বুভুক্ষার নিষ্ঠুর তাড়ন
কোন দেব্গন্ধর্বের মৃদুল ছোয়ায়
লজ্জায় মিইয়ে পড়ে
সদ্য -চোখ -মেলা -ভালবাসার কমল মিড়ে I

তখনও তুমি নিঃশব্দে তাকিয়ে আছ
দূর -দিগ বলয়ের বিদিশা শূণ্যতার পানে I
আর তোমার রহস্য নীল সেই দৃষ্টির গভীরে
কী নিবিড় আশ্বাসে কাঁপছে
বিবাগী পূরুরবার
দুকুলহারা ব্যাকুল চাওয়ার দুটি রঙিন পাখা I

তারপর ,
নৈরাত্ম্যের পীতাভ -পান্দুরে পড়ল কি
আনমনে -ভেসে -আসা- সজল মেঘের
একটুখানি কাজল ছায়া ?
অভ্রত্তরণ সাম্পরিশ্বন্গের নীহারে প্রাবৃত
যুগনদ্ধ সুমেরুতন্ত্রে কি ঝিলিক হানলো
অনঙ্গ সুরতবন্ধের বিদ্যুত রিমঝিম ?

তার অকিন্চান্যা নিরায়তনে
তোমার অমা -তনিমার কৌষেয় - বিভ্রম বুঝি
অতর্কিত পূর্বরাগের অভিঘাতে থরথর I
তার প্রসন্ন সুস্মিতে অনামা ভুবনের অরুন স্বপ্ন
ঝরে পরছে ইন্দ্রনীল -ললাটিকা রহ্স্য বঞ্চনায় ঝিলমিল I
তার বিপাশা জ্যোছনার ফেনিল মায়ায়
শিলীভূত নির্ঝরের সুপ্তির কুলে
অরুন্ধতী অস্তিতার ক্ষনভঙ্গী লাস্যের ছন্দ যেন টলমল I

তবুও তুমি অতন্দ্র নয়নে
তাকিয়ে আছ যে কিসের পানে I
তোমার পলকহারা দৃষ্টির বিদ্যুচ্চকিত উল্কারেখায়
খুঁজে পাই নচিকেতা অভীপ্সার রহস্যকুঞ্চিকা --
অনুত্তারার অন্তশ্চ -অন্চার দিব্যক্র্তুর অবন্ধ্যা ইশারায় I
অনেক ব্যর্থতার অনেক মৃত্যুর উত্তাল গর্জন ছাপিয়ে চলেছে
অস্তি আর নাস্তির মিথুনে প্ররোহী
মহাজীবনে অশ্রান্ত উত্তর অয়ন I

মুহুর্তের তরে
ধু -ধু -দিগন্তের উপান্তে ভেসে ওঠে
তোমার কিশোরী আকূতির তাম্রপর্নী প্রচ্ছায়া
অজর সবুজের সঙ্কেতে শবলা I
আরো .....আরো .....দুরে ......
দিবদুহিতা অহনার সুনীল নয়নে
সদ্য ঘুম ভাঙ্গা দৃষ্টির কূলে
অজানা -জানায় অনির্বচনিয়ের মুগ্ধ বিস্ময় Η

তোমার নয়নে তবুও নিমেষ নাই II